পিটাইয়া লাশ বানায়া দিবো : আফ্রিদিকে শাওন মাহমুদ

পিটাইয়া লাশ বানায়া দিবো : আফ্রিদিকে শাওন মাহমুদ

বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খেলতে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের প্রতি তাঁর ভালো লাগার যেন শেষ নেই। সম্প্রতি ঢাকার লালবাগের কেল্লায় ঘুরতে এসে আফ্রিদি সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেছেন- ‘বাংলাদেশে খেলাটা সব সময়ই উপভোগ করি। এটা আমার দেশের বাইরে দেশ। এখানে সম্মান পাই, মানুষের ভালোবাসা পাই। এ কারণে এখানে খেলতে ভালোবাসি, প্রতিবছর আসি।’

পিটাইয়া লাশ বানায়া দিবো : আফ্রিদিকে শাওন মাহমুদ

আফ্রিদির এই মন্তব্যের জেরে শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের কণ্যা শাওন মাহমুদ তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আফ্রিদিকে আক্রমন করে মন্তব্য করেছেন। শাওন মাহমুদের স্ট্যাটাসটি আহরাম বিডির পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

“আফ্রিদি যদি বলে থাকে, বাংলাদেশ তার সেকেন্ড হোম। তাহলে তারে কিছু কথা আমার বলার আছে। হে আফ্রিদি তুমি বাঙ্গালীদের এখনও চিনো নাই। ভালোর ভালো আবার উল্টাইলে মন্দের চূড়ান্ত। সুতরাং বাংলাদেশকে কোন পর্যায়ে গিয়ে সেকেন্ড হোম চোম বলবা না। পিটাইয়া লাশ বানায় দিবোনে সকলে। জায়গা মতন পাইলে হুম।”

শাওন মাহমুদের এই স্ট্যাটাসের সমালোচনা করেছেন অনেকেই। জনপ্রিয় অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট রাশেদ খান তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন-

“১৯৭১ সালে নিহত সুরকার আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন।

“আফ্রিদি যদি বলে থাকে, বাংলাদেশ তার সেকেন্ড হোম। তাহলে তারে কিছু কথা আমার বলার আছে।
হে আফ্রিদি তুমি বাঙ্গালীদের এখনও চিনো নাই। ভালোর ভালো আবার উল্টাইলে মন্দের চূড়ান্ত। সুতরাং বাংলাদেশকে কোন পর্যায়ে গিয়ে সেকেন্ড হোম চোম বলবা না। পিটাইয়া লাশ বানায় দিবোনে সকলে। জায়গা মতন পাইলে হুম।”

গতকাল জাতিসংগে ‘রোহিঙ্গা ইস্যু এজেন্ডা হিসাবে গৃহীত হয়েছে’ তা নিয়ে একটি ভোট হয়েছে। সেখানে শাওন মাহমুদদের কাছে চেতনার বন্ধু হিসাবে ভারত বাংলাদেশের পক্ষে ভোট দানে বিরত ছিল। এই বিষয়ে উনি কিছুই লিখলেন না। উনি লিখেছেন, কেন শহীদ আফ্রিদি বাংলাদেশ কে তার আরেক দেশ মনে হয় এর প্রতীবাদ করে।

কি অদ্ভুদ এদের চেতনা! কেবল মাত্র ভারতের অন্ধ গোলামী করতে হবে বলেই এরা ১৯৭১ সংখ্যাটিকে ব্যাবসায়ের পন্য বানিয়ে ফেলেছে। স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিনিয়ত বিএসএফ এর গুলিতে পাখির মত বাংলাদেশী মরলেও এরা ভারতের বিরুদ্ধে একটি শব্দ লিখে না।
২০১৭ সালে এসেও ১৯৭১ সালের গুম-হত্যা-ধর্ষন নিয়ে উচ্চকণ্ঠ হলেও ২০১৭ সালের গুম-খুন-ধর্ষন নিয়ে এরা টু-শব্দ করে না।

বিশ্বে এ যাবত কেবল একটি বার পারমানবিক বোমা হামলা হয়েছে। আমেরিকার সেই হামলায় জাপানের হিরশিমা-নাগাসিকা নামের দুইটি শহরের লাখো মানুষ নিহত হয়েছে। আজো সেই দুই শহরে পারমানবিক বোমার ইফেক্টের কারনে বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নিচ্ছে। কিন্তু দেশের অগ্রগতির জন্য জাপান সেই অতীত ভুলে আমেরিকাকে বানিয়ে নিয়েছে তার উন্নয়নের সব চাইতে বড় অংশীদার।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ইন্ডিয়ার পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বন্ধু ছিল রাশিয়া ।এখন পাকিস্তান আর রাশিয়া বন্ধু ! দুটো দেশ একসাথে সামরিক মহড়া দিচ্ছে।

১৯৭৯ সাল থেকে আমেরিকা এবং ইরান প্রকাশ্য শত্রু ।কিন্তু আইএস কে দমনের মিশনে ইরাকের মসুল অভিযানে আমেরিকা এবং ইরান একসাথে যুদ্ধ করছে ।

এভাবে চাইলে অনেক অনেক উদাহরণ দেয়া যায়, বিশ্বের সকল দেশ তাদের নিজের স্বার্থে বন্ধু এবং শত্রু চেঞ্জ করেছে। কিন্তু এক আশ্চার্য দেশ হচ্ছে এই বাংলাদেশ। যারা স্বাধীনতার এত বছর পরেও তার শত্রু বা মিত্রের মধ্যে কোন চেঞ্জ আনতে পারে নাই। “চেতনা” নামের এক অদ্ভুদ শব্দের ভিতরে প্রজন্ম কে বন্ধি করে রেখেছে এই শাওন মাহমুদ’রা।

প্রতিনিয়ত সীমান্তে গুলি করে বাংলাদেশি মারলেও ওরা চেতনার দোহাই দিয়ে বলে ভারত আমাদের বন্ধু।
বর্ষায় পানি ছেড়ে বাংলাদেশকে ডুবিয়ে দিলেও ওরা বলে ভারত আমাদের বন্ধু।
শীতে পানি বন্ধ করে মরুভূমি বানিয়ে দিলেও ভারতই নাকি বাংলাদেশের বন্ধু !

আর বাংলাদেশের চরম দুঃসময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ালে ও পাকিস্তান আমাদের শত্রু!

চেতনা শব্দের মানে আমি নিজেও আসলে অনেকদিন বুঝতাম না। কিন্তু যেদিন পিয়াস করিম স্যারকে বলতে শুনেছি
-“ভারতের অন্ধ দালালি করবার শুদ্ধ শব্দ হচ্ছে চেতনা।”

সেদিন থেকে ‘চেতনা’ শব্দটিকে প্রতিক্ষনে কেবল ঘৃণা করছি।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment